মুক্তিযুদ্ধে মহেশখালীঃ
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অন্যান্য থানারমত মহেশখালী থানাতে সাধারণ মানুষের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত হয়। তৎকালীন মহেশখালী থানা আওয়ামীলীগ কমিটিসহ মুক্তি সচেতন জনসাধারণ সবাইকে নিয়া থানা সংগ্রাম কমিটি ও ইউনিয়ন সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় থানা পর্যায়ে সংগ্রাম কমিটি গঠন পূর্বক মুক্তিসংগ্রামী বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শুরু করা হয়। তৎমতে, মহেশখালী থানা হতে অস্ত্রযোগাড় ও আরো বিভিন্ন উপায়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে প্রতি ইউনিয়নে অস্ত্র প্রেরণ অস্ত্র প্রশিক্ষণ ইত্যাদি কার্য পরিচালিত হয়।
উক্তভাবে মহেশখালীতে ১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মহেশখালী থানা সংগ্রাম কমিটি এবং স্থানীয় মুক্তি বাহিনীরা মুক্ত এলাকা হিসেবে মহেশখালী উপজেলাকে সুরক্ষিত রাখেন এবং উক্ত মুক্ত এলাকা হতে চৌফলদন্ডী (কক্সবাজার থানা) ইউনিয়নের মাধ্যমে রামু, উখিয়া ও বান্দরবন জেলার মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যতটুকু সম্ভব অস্ত্র গোল-বারদ, প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় ও খাদ্য-দ্রব্যাদি সরবরাহ করা হয়। উক্ত কর্মকান্ড মুক্তিযুদ্ধের রাজাকার সৃষ্টি করে মুক্তিযোদ্ধাগণের বিরুদ্ধে কালারমারছড়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাগণকে আক্রমণ করে। যা একটি মুক্তিযোদ্ধ ও রাজাকারের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার জানতে পেরে মুক্তি সংগ্রামীদেরকে পাকিস্তানের শত্রু ঘোষনা করে। (মহেশখালী থানায় রেকর্ড আছ) মুক্তিযুদ্ধাদের যেখানে পাওয়া যায় তাদেরকে গুলি করে হত্যা, সম্পদ লুটপাঠসহ যেকোন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
যারই প্রেক্ষিতে এপ্রিল মাসের শেষের দিকে রাজাকারদের হাতে কালারমারছড়া ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার মোঃ শরিফ চেয়ারম্যান ১ম শহীদ হন এবং আরো বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে রাজাকারেরা কক্সবাজারে অবস্থানরত পাকহানাদার বাহিনীকে সোপর্দ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের মহেশখালীতে উপস্থিতি ও কর্মকান্ডের কথা জানাইয়া মহেশখালীর পাকহানাদারদের দোসর থানা শান্তি কমিটি কক্সবাজারে গিয়ে পাকহানাদারদের সঙ্গে বৈঠক করে মহেশখালী হতে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, বিতাস এবং মুক্তিযোদ্ধাদের যাহারা সহযোগিতা করতেছে তাদেরকে নিধনসহ লুটপাঠ, অগ্নিসংযোগ প্রয়োজনবোধে অমুসলিমদেরকে ধর্মান্তর করার জন্য ১৯৭১ সালের ৬মে, ২০০ দুধর্ষ পাকহানাদার বাহিনীকে মহেশখালীতে নিয়ে আসে। হানাদারদের সাথে আরো ৪০০ জনের দেশীয় রাজাকার যুক্ত হয়ে সমগ্র মহেশখালীতে মুক্তি বাহিনী ও তাদের পক্ষের লোকজন ও অমুসলিমদেরসহ নির্বিচারে হত্যা, ঘরবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ মূল্যবান সম্পদ লুট, অবলা নারীদের ধর্ষণ, জোর পূর্বক অমুসলিদের ধর্মান্তর ও পুরুষাঙ্গ খৎনা করে পৃথিবীর বুকে এক নজির বিহীন অত্যাচার ও নির্যাতন করা হয়। এতে পরিচিত হিন্দু মুসলিম, বৌদ্ধ একজনকে শহীদ করে এবং মহেশখালী আদিনাথ পাহাড়ে আশ্রয় নেয়া মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ জনসাধারন প্রায় ৭০০ জনকে গুলি করে হত্যা করে। যারই ফসল মহেশখালীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে সর্বমোট ১০ টি বধ্যভূমি মুক্তিযোদ্ধের স্বাক্ষী হয়ে আছ। আরো উল্লেখ্য যে, অবলা ধর্ষিতা নাম না বলা মা-বোন ৩০০ জনের মত পাকহানাদারের গুলিবিদ্ধ ও অত্যাচার আঘাত প্রাপ্ত ২০ জনের মতো ভয়ানক নির্যাতনের ফলে কিছুদিন পর পর মৃত্যুর মূখে পতিত হয়। যাহা মহেশখালীর ইতিহাসে চিরদিন ভাস্কর চিত্র হয়ে থাকব। আরো উল্লেখ্য যে, মহেশখালী থানাটি মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে বাহিরের অন্যকোন মুক্তিযোদ্ধা এসে সাহায্য করতে না পারায় এই দ্বীপে মুক্তি সংগ্রামীদের উপর অভাবনীয় নির্যাতন পাকহানাদার ও তাদের দোসর শান্তি কমিটির লোক রাজাকার আলবদরদের সাহায্য করতে পেরেছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে একদিন এতগুলো মানুষ হত্যা করার ইতিহাস মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাসে বিরল। সুতরাং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এ দ্বীপাঞ্চলের মানুষের যে তাজা বুকের তাজা রক্তদান জাতির ইতিহাসে চির দিন অমর হয়ে থাকব।
বধ্যভূমির নামঃ-
গোরকঘাটা মাছবাজার বধ্যভূমি, গোরকঘাটা মাতারবাড়ী বধ্যভূমি, ঠাকুরতলা আদিনাথ মোঠির দক্ষিণ পাশের বধ্যভূমি, পুটিবিলা কায়স্থপাড়া বধ্যভূমি, পুটিবিলা পালপাড়া বধ্যভূমি, দেবাঙ্গাপাড়া বধ্যভূমি, বড় মহশেখালী হিন্দুপাড়া বধ্যভূমি, হোয়ানক পুঁইছড়া বধ্যভূমি, কালারমারছড়া বাজার বধ্যভূমি। ১,০০০ (এক হাজার) বাড়ীঘর ভষ্মিভুত করে।
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা:
ক্র. নং | গেজেট/বিশেষ সংখ্যা/মুক্তিবার্তা | ভোটারের নাম | পিতার নাম | গ্রাম/মহল্লা | ইউনিয়ন/পৌরসভা |
০১ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৬৯, ক্রমিক নং-৮৪, বিশেষ গেজেট নং-৭২২৩,৩৯৩৯০০৭, মুক্তিবার্তা (লাল বই) এর ১৫ পৃষ্ঠা নং-০২১৩০৬০০০৫ | জনাব মোঃ ছালেহ আহমদ | মরহুম হাজী মিয়া | গোরকঘাটা | মহেশখালী পৌরসভা |
০২ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৭১, মুক্তিবার্তা (লাল বই) এর ১৫ পৃষ্ঠা নং-০২১৩০৬০০০২ | জনাব পুলিন বিহারী শর্মা | যতিশ চন্দ্র শর্মা | মাতারবাড়ী | মাতারবাড়ী |
০৩ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৭২, বিশেষ গজেটে ক্রঃ নং- ৮৫,৭২২৮, ৩৯৪৬৩২০, মুক্তিবার্তা (লাল বই) এর ১৫ পৃষ্ঠা নং-০২১৩০৬০০০১ | জনাব কালা মিয়া | মৃত আশরাফ আলী | দক্ষিণ নলবিলা | ছোট মহেশখালী |
০৪ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৭৩ | জনাব বাচা মিয়া | মৃত মংগল চান | সিপাহী পাড়া | ছোট মহেশখালী |
০৫ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৭৪ | জনাব আবদুল হক | মৃত মোহাম্মদ উল্লাহ | কায়দাবাদ | শাপলাপুর |
০৬ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৭৫ | খগন্দ্রে লাল শীল | বিনোদ বিহারী শীল | বড় মহশেখালী | বড় মহেশখালী |
০৭ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৭৭ | জনাব সৈয়দ লকিতুল্লাহ | মৃত ছৈয়দ মকউদুল করিম | কালারমারছড়া | কালারমারছড়া |
০৮ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৭৮ | জনাব সৈয়দ আহমদ উল্লাহ | মৃত ছৈয়দ মকউদুল করিম | কালারমারছড়া | কালারমারছড়া |
০৯ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৮০ | জনাব মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ খান | মৃত মোহাম্মদ আলী খান | গোরকঘাটা | মহেশখালী পৌরসভা |
১০ | জুন ৪,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-৫৬৬৮ ক্রমিক নং-১৮১ | জনাব আমজাদ হোসেন | মৃত হাজী লাল মিয়া | গোরকঘাটা | মহেশখালী পৌরসভা |
১১ | নভম্বের ২৩,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-১০৪২৪ ক্রমিক নং-৩০১ | জনাব আবু জাফর ছিদ্দিকী | মোঃ জাবের আহমদ | জাগিরাঘোনা | বড় মহেশখালী |
১২ | নভম্বের ২৩,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-১০৪২৪ ক্রমিক নং-৩০২ | জনাব ফজল আহমদ আকবরী | মৃত সৈয়দ আহমদ | ফকিরাঘোনা | বড় মহেশখালী |
১৩ | নভম্বের ২৩,২০০৫ এর গেজেট পাতা নং-১০৪২৪ ক্রমিক নং-৩০৩ | জনাব মোহাম্মদ ইসহাক | মৃত কালু মিয়া | ফকিরাঘোনা | বড় মহেশখালী |
১৪ | মুক্তিবার্তা (লাল বই) এর ১৫ পৃষ্ঠা নং-০২১৩০৬০০০৭ | জনাব সুনিল বিকাশ দাশ | রবীন্দ্রনাথ দাশ | পুটিবিলা | মহেশখালী পৌরসভা |
১৫ | মুক্তিবার্তা (লাল বই) এর ১৫ পৃষ্ঠা নং-০২১৩০৬০০১৩ | জনাব আক্য মং | মৃত লু মং | গোরকঘাটা | মহেশখালী পৌরসভা |
১৬ | মুক্তিবার্তা (লাল বই) এর ১৫ পৃষ্ঠা নং-০২১৩০৬০০১৫ | জনাব নাজির আহমেদ | মৃত ইউসুফ আলী | গোরকঘাটা | মহেশখালী পৌরসভা |
১৭ | মুক্তিবার্তা (লাল বই) এর ১৫ পৃষ্ঠা নং-০২১৩০৬০০১৬ | জনাব ডাঃ মোঃ ফিরোজ | মি: আহমেদ | গোরকঘাটা | মহেশখালী পৌরসভা |
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS